ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তানোরের হরিপুর স্কুল আকুন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত


আপডেট সময় : ২০২৫-০৯-০৩ ২২:৩৩:০০
তানোরের হরিপুর স্কুল আকুন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত তানোরের হরিপুর স্কুল আকুন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত

দেলোয়ার হোসেন সোহেল তানোর থেকে।

রাজশাহীর তানোরের কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) হরিপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয় আকুন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এতে স্কুলের পাঠদান মুখ থুবড়ে পড়েছে।

মানসম্মত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমান কোনো সুযোগ-সুবিধাও এখানে নাই। স্কুলে কমনরুম, বিজ্ঞানাগার, লাইব্রেরী ও কম্পিউটার নাই। স্থানীয় অভিভাবক, শিক্ষানুরাগী সচেতন মহল ও শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি থেকে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ টাকা আয় হলেও স্কুলের তহবিল প্রায় শূণ্য। অভিভাবক মহল কম্পিউটার, বিজ্ঞান শিক্ষক ও লাইব্রেরিয়ানের (সহকারী শিক্ষক) বেতন বন্ধের দাবি তুলেছেন।

জানা গেছে, বিগত ১৯৪৭ সালে উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দুরে কামারগাঁ ইউপির হরিপুর গ্রামে প্রথমে মাদরাসা স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালে সেটা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৯৬৫ সালে হরিপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয় করা হয় এবং ১৯৮৫ সালে এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষক ১২ জন ও কর্মচারী রয়েছেন ৩ জন। বিদ্যালয়ে খাতা-কলমে ১৭০ শিক্ষার্থী রয়েছে বলে জানানো হলেও বাস্তবে এর অর্ধেক শিক্ষার্থীরও দেখা মেলেনি।

এদিকে বিদ্যালয়ে মোট ৮০১ শতক সম্পত্তি রয়েছে, এর মধ্যে একটি পুকুর ও ১৭ বিঘা তিন ফসলি জমি রয়েছে। প্রতি বছর এসব জমি থেকে প্রায় ৮ লাখ টাকা আয় হয়। সেই হিসেবে ২০২১ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত  প্রায় ৩২ লাখ টাকা স্কুল ফান্ডে জমা হবার কথা। বিগত ২০২১  সহকারি শিক্ষক লহির উদ্দিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক হবার পর থেকে স্কুল ফান্ডে কোনো টাকা জমা দেখাতে পারেননি।

এমনকি, বিগত২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর পর সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ (ইউএনও) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পান। কিন্ত্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লহির উদ্দিন গোপণে সভাপতি বানিয়ে স্কুলের বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ছেন। এমনকি এফডিআর ফান্ডের টাকাও উত্তোলন করে নয়ছয় করেছে। পরবর্তীতে ধরা পড়লে শিক্ষকদের চাপে সেই টাকা ব্যংকে জমা দিয়েছেন।

এদিকে, এ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও তানোর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান হিসেব চাইলে ভরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লহির উদ্দিন কোনো হিসেব না দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে কালক্ষেপণ করছে। রবিউল ইসলাম, হাসান আলী রেবেকা খাতুনসহ একাধিক শিক্ষার্থী কম্পিউটার শিক্ষক কম্পিউটার না জানায় কম্পিউটার ক্লাশ নেয়া হয় না বলে জানান।

অন্যদিকে বিজ্ঞানাগার না থাকায় বিজ্ঞান শিক্ষক অনেকটা বসে বসে বেতনভাতা ভোগ করছেন। তারা বলেন, স্কুলে কম্পিউটার ও বিজ্ঞানাগার না থাকায় শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন যাবত কম্পিউটার শিক্ষা (হাতে-কলমে) ও বিজ্ঞান শিক্ষা অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

স্থানীয় অভিভাবক বাবু, সজিব, আনোয়ার বলেন, লহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) তদন্ত করা প্রয়োজন,কারণ তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে,তদন্ত করলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে।


এদিকে, গত ১ সেপ্টেম্বর সোমবার স্কুলের বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র তুলে এলাকাবাসি ডাকযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক) এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তা বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লহির উদ্দিন নানা অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্কুলের সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী চলছে, তিনি বলেন, হিসেব দেয়া হয়েছে সভাপতি তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে হরিপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের এ্যাডহক কমিটির সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লহির উদ্দিনের কাছে হিসেব চাওয়া হয়েছে, কিন্ত্ত তিনি কোনো হিসেব দিতে পারেনি। তিনি বলেন, সে হিসেব না দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে কালক্ষেপণ করছে।





 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ